মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসা প্রসেসিং Malaysia business visa apply

মালয়েশিয়ার বিজনেস ভিসা আসলে “Single Entry Visa (SEV)” বা “Business Visa” নামে পরিচিত, যা মূলত ব্যবসায়িক সভা, কনফারেন্স, সেমিনার, ট্রেড আলোচনা, চুক্তি স্বাক্ষর, বা সম্ভাব্য বিনিয়োগ যাচাই করার জন্য দেওয়া হয়। আপনি যদি মালয়েশিয়াতে ব্যবসা করতে চান তাহলে এই অবশ্যই করতে হবে।

মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসা প্রসেসিং

ভিসার ধরন: Single Entry Visa (SEV – Business Purpose) ১ বার প্রবেশের অনুমতি দেয়। সাধারণত ৩০ দিন মেয়াদী  হয় (কখনও কখনও ৩ মাস পর্যন্ত হতে পারে)। কাজ (চাকরি) করার অনুমতি নেই।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
  1. বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ৬ মাসের মেয়াদ থাকতে হবে)।
  2. পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম (IMM.47)।
  3. সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজ ছবি (২ কপি)।
  4. কোম্পানির ইনভাইটেশন লেটার / স্পন্সর লেটার (মালয়েশিয়ার কোম্পানি থেকে)।
  5. নিজের কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের সুপারিশপত্র (বাংলাদেশ থেকে)।
  6. ভ্রমণের উদ্দেশ্য সম্পর্কিত কাগজপত্র (মিটিং / কনফারেন্স / ব্যবসায়িক চুক্তি ইত্যাদি)।
  7. ফ্লাইট টিকিট বুকিং (রিটার্ন টিকিট থাকলে ভালো হয়)।
  8. হোটেল বুকিং বা থাকার ঠিকানা।
  9. ব্যাংক স্টেটমেন্ট (সর্বশেষ ৩–৬ মাস, আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ হিসেবে)।
ভিসা ফি (আনুমানিক)

মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসার ফি দেশভেদে আলাদা হয়। বাংলাদেশ থেকে সাধারণত BDT 5000 – 7000 টাকার মধ্যে (এক্সচেঞ্জ রেট অনুযায়ী পরিবর্তন হতে পারে)।

আবেদন প্রক্রিয়া
  1. নিকটস্থ মালয়েশিয়ান হাইকমিশন/এম্বেসি (ঢাকা, বাংলাদেশ) এ আবেদন জমা দিতে হয়।
  2. সকল ডকুমেন্ট জমা দিয়ে ফি প্রদান করতে হবে।
  3. প্রসেসিং টাইম সাধারণত ৭–১০ কার্যদিবস (কখনও বেশি লাগতে পারে)।
  4. ভিসা ইস্যু হলে পাসপোর্টে স্টিকার আকারে লাগানো হবে।
আরও পড়ুন-Malaysia calling visa চালু হলো মালয়েশিয়া কলিং ভিসা ২০২৫
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

বিজনেস ভিসায় কাজ করার অনুমতি নেই, শুধু ব্যবসায়িক ভ্রমণ ও মিটিং করা যাবে। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে মালয়েশিয়া ছাড়তে হবে। যদি মালয়েশিয়ায় কোম্পানি খোলার বা দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা থাকে, তবে Investor Visa / MM2H (Malaysia My Second Home) / Work Visa ইত্যাদি ভিসা ধরন নিতে হবে।

মালয়েশিয়ার বিজনেস ভিসা (Business Visa / Single Entry Visa) নেওয়ার আগে এর সুবিধা ও অসুবিধা জেনে রাখা দরকার।

মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসার সুবিধা

  • সহজ প্রসেসিং
  • সাধারণত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলেই ৭–১০ কর্মদিবসে ভিসা পাওয়া যায়।
  • অন-অ্যারাইভাল ঝামেলা নেই
  • ভিসা আগে থেকে থাকলে এয়ারপোর্টে প্রবেশ সহজ হয়, আলাদা ঝামেলা থাকে না।
  • বিজনেস মিটিং ও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ
  •  ব্যবসায়িক মিটিং, কনফারেন্স, প্রদর্শনী (Expo), ট্রেড ফেয়ার ইত্যাদিতে অংশ নেওয়া যায়।
  • নেটওয়ার্কিং সুযোগ
  •    মালয়েশিয়ার ব্যবসায়িক কমিউনিটি ও বিদেশি কোম্পানির সাথে সম্পর্ক গড়ার সুযোগ পাওয়া যায়।
  • অল্প খরচে ভ্রমণ
  •    ভিসা ফি তুলনামূলকভাবে কম (প্রায় ৫–৭ হাজার টাকা) এবং সময় কম লাগে।
  • স্বল্পমেয়াদী ব্যবসায়িক ভ্রমণের জন্য উপযোগী
  •   দ্রুত চুক্তি, বাজার যাচাই বা ব্যবসায়িক আলোচনা শেষ করে ফেরার জন্য ভালো বিকল্প।

মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসার অসুবিধা

  • কাজ করার অনুমতি নেই
  •   এই ভিসায় চাকরি বা ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে না; শুধু মিটিং বা আলোচনার সীমাবদ্ধতা থাকে।
  • 2.স্বল্প মেয়াদী ভিসা
  •    সাধারণত ৩০ দিন বা সর্বোচ্চ ৩ মাস পর্যন্ত বৈধ, দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসার জন্য যথেষ্ট নয়।
  • একবার প্রবেশের ভিসা
  •  অনেক ক্ষেত্রে Single Entry হয়; ভ্রমণ শেষে ফের প্রবেশ করতে চাইলে আবার ভিসা নিতে হবে।
  • কোম্পানি ইনভাইটেশন লেটার আবশ্যক
  •   মালয়েশিয়ার কোনো কোম্পানি থেকে ইনভাইটেশন না থাকলে ভিসা পাওয়া কঠিন।
  • দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসায় উপযোগী নয়
  •    মালয়েশিয়ায় কোম্পানি স্থাপন বা বিনিয়োগ করতে চাইলে অন্য ভিসা (Investor Visa, Work Visa, MM2H) নিতে হবে।
  • ভিসা রিজেক্ট হওয়ার ঝুঁকি
  •  কাগজপত্র সঠিক না হলে বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য স্পষ্ট না হলে ভিসা নাও পেতে পারেন

মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসা প্রশ্ন–উত্তর

মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসা কী?

এটি একটি স্বল্পমেয়াদী ভিসা (Single Entry Visa), যা ব্যবসায়িক সভা, সেমিনার, কনফারেন্স, ট্রেড ফেয়ার বা সম্ভাব্য বিনিয়োগ আলোচনার জন্য দেওয়া হয়।

এই ভিসায় কি চাকরি বা ব্যবসা করা যায়?

না এই ভিসা শুধু ব্যবসায়িক আলোচনার জন্য; কাজ (চাকরি) বা ব্যবসা পরিচালনা করা যায় না।

মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসার মেয়াদ কতদিন?

সাধারণত ৩০ দিন। কিছু ক্ষেত্রে ৩ মাস পর্যন্ত হতে পারে।

ভিসাটি একবারে ব্যবহার করা যায় নাকি একাধিকবার?

সাধারণত Single Entry Visa (একবার প্রবেশযোগ্য)। ভিসা শেষ হলে পুনরায় আবেদন করতে হয়।

আবেদন করতে কী কী কাগজপত্র লাগবে?

  •  বৈধ পাসপোর্ট (৬ মাস মেয়াদ)
  •  পূর্ণাঙ্গ ভিসা আবেদন ফর্ম
  •  ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  •  মালয়েশিয়ার কোম্পানির ইনভাইটেশন লেটার
  •  বাংলাদেশি কোম্পানির সুপারিশপত্র
  •  ফ্লাইট টিকিট ও হোটেল বুকিং
  •  ব্যাংক স্টেটমেন্ট (৩–৬ মাস)

মালয়েশিয়া বিজনেস  ভিসার ফি কত?

প্রায় BDT 5,000 – 7,000 (দেশভেদে সামান্য ভিন্ন হতে পারে)।

মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসা প্রসেসিং টাইম কতদিন লাগে?

সাধারণত ৭–১০ কর্মদিবস।

মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসার জন্য কোথায় আবেদন করতে হবে?

মালয়েশিয়ান হাইকমিশন, ঢাকা (বাংলাদেশে অফিসিয়াল ভিসা প্রসেসিং সেন্টার)। ভিসা এজেন্ট বা অনুমোদিত VFS সেন্টারের মাধ্যমেও জমা দেওয়া যায়।

Leave a Comment